কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সুরক্ষা টিপস্

কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সুরক্ষা টিপস্

 

COVID-19 Coronavirus Safety Tips

কোভিড-১৯ কী?

কোভিড-১৯ শ্বাসযন্ত্রের একটি সংক্রামক রোগ যা সার্স-কোভ-২ নামে একটি নতুন আবিষ্কৃত করোনাভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট। করোনা থেকে ‘কো’, ভাইরাস থেকে ‘ভি’, এবং ‘ডিজিজ’ বা ‘রোগ’ থেকে ‘ডি’ নিয়ে এর সংক্ষিপ্ত নামকরণ কোভিড করা হয়।

কোভিড-১৯ এর লক্ষণসমূহ কী?

কোভিড-১৯ এর অনেক লক্ষণ ফ্লু (ইনফ্লুয়েঞ্জা), ঠান্ডা জ্বরের মতোই। এ কারনেই কোনও ব্যক্তি কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষা করে নেয়া দরকার। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার দুই থেকে ১৪ দিন পরে এই রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এতে খুব হাল্কা থেকে গুরুতর অসুস্থতা পর্যন্ত হতে পারে। এই রোগে সংক্রমিত হয়েছে এমন অনেক লোকের ক্ষেত্রে আবার কোন লক্ষনীয় উপসর্গ দেখা যায়না।এই রোগের সাধারণ লক্ষণগুলো হল জ্বর, কাশি এবং ক্লান্তি। অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা বা চাপ, মাংসপেশী বা শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, স্বাদ বা গন্ধ হারানো, বিভ্রান্তি, গলা ব্যথা, রক্তজমাট বাঁধা বা নাক দিয়ে পানি পড়া, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব এবং বমি, পেটে ব্যথা এবং ত্বকে ফুসকুড়ি উঠা। এসব লক্ষণ ছাড়াও শিশুদের খেতে অসুবিধা হতে পারে। যে কোনো বয়সের শিশুরা কোভিড -১৯ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যদিও শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই রোগের লক্ষণগুলো একই রকমের হয়, তবে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুরা এই রোগে সাধারণত কম গুরুতর অসুস্থ হয়। যে সব লক্ষণ দেখা দিলে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় সেগুলো হলো, শ্বাস নিতে অসুবিধা/দ্রুত বা অগভীর শ্বাস (এছাড়াও কুঁকড়ে যাওয়া, শিশুদেরকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর অক্ষমতা), নীল ঠোঁট বা মুখ, বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা, বিভ্রান্তি, ঘুম না ভাঙ্গা/আলাপচারিতায় অনীহা, কোনো কিছু পান করার অক্ষমতা বা তরল কিছু ধরে রাখতে না পারা এবং মারাত্মক পেট ব্যথা।

কোভিড -১৯ করোনাভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?

সংক্রমিত ব্যক্তি যখন কাশি বা হাঁচি দেয় অথবা কথা বলে, গান করে বা শ্বাস নেয় তখন মুখ বা নাক থেকে নিঃসৃত ছোট ছোট কণার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই কণাগুলো আকারে বড় শ্বাসযন্ত্রের ফোঁটা থেকে শুরু করে অ্যারোসোলের ছোট ফোঁটার মতো পর্যন্ত হতে পারে এবং কোন ধরনের লক্ষণ ছাড়াও মানুষজন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হতে পারে।এখন পর্যন্ত যে সব প্রমাণ পাওয়া গেছে সেগুলো থেকে বোঝা যায় যে, ভাইরাসটি মূলত এমন ব্যক্তিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে যারা একে অপরের সাথে সাধারণত এক মিটারের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ করে। ভাইরাস বহনকারী কণাগুলো যখন শ্বাস নেয়া হয় বা সরাসরি চোখ, নাক বা মুখের সংস্পর্শে আসে তখনই একজন ব্যক্তি থেকে অন্যজনের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে। বাতাস চলাচলে সমস্যা রয়েছে এবং/অথবা জনাকীর্ণ অভ্যন্তরীণ পরিবেশে যেখানে মানুষের বেশি সময় কাটানোর প্রবণতা থাকে সেখানে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। বায়ু চলাচলে সমস্যা রয়েছে এমন অভ্যন্তরীণ স্থান বাইরের স্থানের তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ভাইরাস দ্বারা দূষিত সমতল স্পর্শ করার পর মানুষ তাদের মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করেও সংক্রমিত হতে পারে। কোভিড-১৯ কীভাবে ছড়ায় এবং কোন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা তাদের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সুরক্ষা টিপস:

·        নিয়ম মেনে ভ্যাকসিন নিন এবং টিকা দেওয়ার স্থানীয় নির্দেশিকা অনুসরণ করুন।

·        অন্যদের থেকে কমপক্ষে তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন, এমনকি তারা অসুস্থ বলে মনে না হলেও। ভিড় এবং ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলুন।

·        সামাজিক সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয় এমন জনাকীর্ণ স্থানে মাস্ক পরুন

·        ঘনঘন সাবান পানি দিয়ে বা অ্যালকোহলযু্ক্ত হাত-ধোয়ার সামগ্রী ব্যবহার করে আপনার হাত ধূয়ে নিন

·        কাশি বা হাঁচির সময় বাঁকানো কনুই বা টিস্যু দিয়ে মুখ নাক ঢেকে রাখুন। ব্যবহৃত টিস্যু অবিলম্বে নষ্ট করুন এবং নিয়মিত হাত পরিষ্কার করুন।

·        আপনার যদি উপসর্গ দেখা দেয় বা COVID-19 এর জন্য ইতিবাচক পরীক্ষা হয়, তবে আপনি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে আলাদা করুন।

·        আপনি যখন আপনার মাস্কটি খুলে ফেলবেন, এটি একটি পরিষ্কার প্লাস্টিকের ব্যাগে সংরক্ষণ করুন এবং প্রতিদিন ব্যাবহার হয় এমন ফ্যাব্রিক মাস্ক হলে এটি ধুয়ে ফেলুন বা এটি একটি মেডিকেল মাস্ক হলে এটিকে ডাস্টবিনে ফেলে।

·        ফোন, দরজার হাতল, লাইটের সুইচ এবং কাউন্টারটপের মতো ঘনঘন স্পর্শ করা হয় এরকম জিনিসগুলো নিয়মিত পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করুন

·        আপনার বা আপনার সন্তানের জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিন।

তথ্য ও সহযোগীতার জন্য কল করুন ৩৩৩, ১৬২৬৩,৩৩৩--, ০৯৬৬৬৭৭৭২২২ এই নম্বর সূমহে।

 

ইনফো সোর্স: ইউনিসেফ