সেভিংস্ একাউন্টের সুদ বন্ধ করার পদ্ধতি

সেভিংস্ একাউন্টের সুদ বন্ধ করার পদ্ধতি

 

সেভিংস্ একাউন্টের সুদ বন্ধ করার পদ্ধতি

বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ। ইসলাম ধর্মে সুদ একেবারেই নিষিদ্ধ। আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে নানাবিধ কারণে ব্যাংকিং করার প্রয়োজন হলেও প্রত্যেক মুসলমানই সুদ থেকে বেঁচে থাকতে চায়। বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ইসলামী ব্যাংক থাকলেও প্রক্রিয়াগত কারণে সবসময় ইসলামী ব্যাংকের সেবা গ্রহণ করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। যার ফলে প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার আদলেই তাদের ব্যাংকিং চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছেন।

প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার অধীনে যারা পার্সোনাল সেভিংস একাউন্ট পরিচালনা করে যাচ্ছেন তারা অনেকেই সুদের প্রতি কোন আগ্রহ না থাকলেও সিস্টেম অনুযায়ী তাদের অ্যাকাউন্টে সুদ যোগ হচ্ছে। অনেকেই এটিকে বন্ধ করার চেষ্টা করছেন আবার অনেকে বুঝতে পারছেন না এটা কিভাবে বন্ধ করবেন।

প্রথমে একটি কথা বলে রাখি, আপনি কেবল সুদ ক্যালকুলেশন বন্ধ করলেই যে ব্যাংক আপনার টাকা সুদে বিনোয়োগ করবে না বিষয়টি এমন নয়, আবার এমনও নয় যে আপনি সুদের কবলে থেকে বেচেঁ গেলেন। এরপরও যারা অন্তত সুদের টাকা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে চান বা সেভিংস অ্যাকাউন্টের অর্জিত সুদ গ্রহণ না করতে চান তারা নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করতে পারেন।

প্রথমে জানার চেষ্টা করুন আপনি যে একাউন্ট ব্যবহার করছেন সেই একাউন্টের ইন্টারেস্ট ক্যালকুলেশন করার ধরন টা কেমন।

আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্যাংক সঞ্চয়ী হিসাবগুলোতে সাধারণত প্রতি মাসের সর্বনিম্ন স্থিতির উপর সুদ প্রদান করে। এখানে আরও শর্ত থাকে যে, যদি ব্যাংকের গচ্ছিত টাকার ২৫ ভাগ বা তার বেশি একসাথে তোলা হয় তাহলে সেই মাসের জন্য কোন ইন্টারেস্ট প্রদান করা হবে না।  আবার মাসে আটবার বা সপ্তাহে দুইবারের বেশি চেক জমা দিলে বা উত্তোলন করলে সেই মাসের জন্যও কোন ইন্টারেস্ট হিসাব করা হয় না। এটি সাধারণত বেসিক সেভিংস একাউন্ট গুলোর সাথে হয়ে থাকে। তবে আপনি নিশ্চিত হয়ে নিন আপনি ব্যাংকের কোন প্রোডাক্টটি ব্যবহার করছেন এবং সেই প্রোডাক্টটির ধরন এবং শর্তগুলি কি কি এবং  যদি সম্ভব হয় সেই অনুযায়ী  হিসাব পরিচালনা করে ইন্টারেস্ট বা সুদ ক্যালকুলেশন থেকে বাদ পড়তে পারেন।

আপনার অ্যাকাউন্টটি যদি ডেইলি ইন্টারেস্ট বেয়ারিং (Daily Interest Bearing) হয় তাহলে লক্ষ্য করবেন ইন্টারেস্ট গণনার জন্য ব্যাংক থেকে একটি অ্যামাউন্ট নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেই অ্যামাউন্টের নিচে লেনদেন হলে সেই দিনের জন্য আর কোন ইন্টারেস্ট ক্যালকুলেশন হবে না। তবে কিছু একাউন্ট এর সাথে মাসিক লেনদেনের নির্দিষ্ট সংখ্যক একটি লিমিট থাকে যেটি অতিক্রম করলে ইন্টারেস্ট গণনা থেকে বাদ পড়ে যায়। এই প্রক্রিয়া গুলোতে আপনি দুই ধরনের সুবিধা নিতে পারবেন। একটি হচ্ছে আপনার লেনদেন যদি ইন্টারেস্ট ক্যালকুলেট করা হয় এমন অ্যামাউন্ট এর নিচে হয় তাহলে নিশ্চিন্তে লেনদেন করতে পারেন এখানে কোন ইন্টারেস্ট হবে না । অপরদিকে আপনার লেনদেনের পরিমাণ যদি ব্যাংক কর্তৃক নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন লেনদেন সীমার চেয়ে অধিক হয় বা করার সক্ষমতা থাকে তাহলে এই সুযোগগুলো কে কাজে লাগিয়ে ইন্টারেস্ট কোন থেকে বাদ পড়তে পারেন ।

তবে সর্বোত্তম পরামর্শ হচ্ছে আপনার ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুন। যদি তাদের কোনো সুযোগ থেকে থাকে তাহলে আপনি সেটিকে কাজে লাগিয়ে ইন্টারেস্ট বন্ধ করার জন্য আবেদন করুন। এখানে দুর্ভাগ্য যে অনেক ব্যাংকের ইন্টারেস্ট সফটওয়্যার ভিত্তিক অটোমেটিক ক্যালকুলেশন হয়ে থাকে সকল গ্রাহকের জন্য ডিফল্ট ভাবে। তাই অনেক ব্যাংকেরই নির্দিষ্ট একজন গ্রাহকের জন্য ইন্টারেস্ট ক্যালকুলেশন বন্ধ করার অপশন নেই বা নির্দেশনা নেই যার কারণে আপনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে কিছু কিছু ব্যাংক আপনার চাহিদা অনুযায়ী এই সেবা প্রদান করতেও পারে। তাই আশাহত না হয়ে আগে আপনার ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুন। যদি ব্যাংক কর্তৃক ইন্টারেস্ট ক্যালকুলেটিং বন্ধ করা সম্ভব না হয় তবেই কেবল উপরোক্ত পদ্ধতি গুলোর মাধ্যমে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ


 সকল ক্যাটাগরী ব্রাউজ করতে এখানে ক্লিক করুন... 

ব্যাংকিং টাচে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের উন্মুক্ত এই অনলাইন পরিষেবাকে সৃজনশীলতার মঞ্চ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে বদ্ধ পরিকর। আমরা আপনাদের নিকট হতে ব্যাংকিং ও আর্থিক বিষয়ক শৈল্পিক, শিক্ষামূলক, ডকুমেন্টারি, গবেষণামূলক বা বৈজ্ঞানিক আলোচনা সংক্রান্ত কন্টেন্ট বা যেসব কন্টেন্ট থেকে জনগণ উপকৃত হন এমন সব কন্টেন্ট প্রত্যাশা করি। আপনার মূল্যবান কন্টেন্ট আমাদের কাছে পাঠাতে ই-মেইল করুন  [email protected] এই ঠিকানায়।

আপনার একটু সমর্থনই আমাদের এগিয়ে চলা ও আরও ভাল কিছু করার অনুপ্রেরণা যোগায়। আপনার মূল্যবান সমর্থনটি জানাতে ভিজিট করুন আমাদের সমাজিক যোগযোগের পেজগুলোতে ও লাইক, ফলো ও সাবস্ক্রইব করে আমাদের সাথে থাকুন। ধন্যবাদ

ফেসবুক

ইনস্ট্রাগাম

টুইটার

ইউটিউব

কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। বিস্তারিত.......