সম্প্রতি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংক দ্যা সিটি ব্যাংক লিমিটেড ও দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) বিকাশ দেশে চালু করেছে ডিজিটাল ন্যানো লোন। বিকাশ এবং সিটি ব্যাংকের এই ডিজিটাল লোন নিয়ে আমরা ইতিপূর্বে একটি আর্টিকেল রিলিজ করেছি। যদি আপনি সেটি না পড়ে থাকেন তাহলে এখানে ক্লিক করুন........
বাংলাদেশে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক থাকলেও গ্রামীণ পর্যায়ে তাদের সেবা খুব একটা বিস্তৃত হয়নি। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর শাখা গ্রামীন পর্যায়ে থাকলেও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক সূমহের প্রত্যন্ত পর্যায়ে অবস্থান একবারেই নগন্য। যার ফলে এখনো আমাদের দেশের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ একটি শ্রেণী অল্প কিছু ক্ষুদ্র ঋণের জন্য যেতে হচ্ছে বিভিন্ন মহাজনী সুদে ঋণ নেওয়ার জন্য অথবা উচ্চ হারে সুদ দিয়ে কোন বেসরকারী এনজিও থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের যে কমার্শিয়াল ব্যাংক গুলো রয়েছে সেখান থেকে ক্ষুদ্রঋণ গ্রহনের নীতিমালা অনুযায়ী অনেকেই ঋণ নেওয়ার যোগ্যতা রাখেন না।
২০২১ সালের শেষ সপ্তাহের এই সময় যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ আর কোন স্বপ্ন নয়, এটি এখন একটি প্রজেক্ট। ঠিক এমন একটি সময় এসে দেশের বিরাট একটি শ্রেণীর মানুষ সামান্য কিছু টাকা ঋণের জন্য হন্নে হয়ে বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরছে এটি সত্যই দুঃখজনক। যেখানে বাংলাদেশ এখন অর্ধশতাধিক ব্যাংক সক্রিয় সেবা প্রদান করছে। বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর প্রায় অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ। এত কিছুর পরেও যখন আমাদের এই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিরাট একটা শ্রেণি ডিজিটাল ব্যাংকিং বা ডিজিটাল আর্থিক সেবার অনেক সুবিধা থেকে প্রায় বঞ্চিত তখন আর্থিক খাতে ডিজিটালাইজেশন শব্দটি শুনতে প্রশান্তির হলেও লজ্জাজনক।
ঠিক এমন একটি সময় যুগোপযোগী একটি উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসে বেসরকারি খাতের দ্যা সিটি ব্যাংক ও মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস বিকাশ। উভয় প্রতিষ্ঠানের মিলে যে পরিষেবা দেশের মানুষের কাছে নিয়ে এসেছে সেটি পরিচিতি পেয়েছে ডিজিটাল ন্যানো লোন হিসেবে । এই পদ্ধতিতে যে লোন দেওয়া হয় আমরা অনেকে এটিকে ইলেকট্রনিক্স লোন বা (ই-লোন) বলে থাকি।
সিটি ব্যাংক ও বিকাশের এই সার্ভিসটি সত্যিই আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এটিকে অনেক বড় একটি উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন। এখন দেখার বিষয় বিকাশ ও সিটি ব্যাংকের এই সাহসী উদ্যোগটি জনগণের নিকট কতটা পৌছাতে সক্ষম হয়। সেবাটি চালু হওয়ার পর থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ বিতরণ হলেও এখনো অনেক মানুষ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ঋণ প্রদানের নীতিগত জটিলতার কারণে ঋণ নেওয়ার জন্য যোগ্য নন। এখানে ঋণ প্রদানের জন্য শর্তগুলো কে আরো সহজ করে আরো অধিক সংখ্যক মানুষকে এর আওতায় আনা সম্ভব না হলে এর প্রকৃত সুফল পাওয়া অসম্ভব। যেহেতু এই প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে প্রদানকৃত ক্ষুদ্রঋণ ৫০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ হয়ে থাকে তাই আমরা মনে করছি তুলনামূলক সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা হোক। যাতে করে দেশের প্রত্যান্ত এলাকার সুবিধা বঞ্চিত জনসাধারণ বিকাশ ও সিটি ব্যাংকের এই মহৎ উদ্যোগের সুফল ভোগ করতে পারে। যদিও ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার স্বার্থে এখানে নূম্নতম কিছু নীতিমালা থাকা আবশ্যক। অন্যথায় ঋণখেলাপি বা ডিফল্ডারের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে এতে করে ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যার ফলে সম্ভাবনাময় এই উদ্যোগটি হয়তোবা তার কাঙ্খিত গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারবে না।
তাই সকল দিক বিবেচনা করে যতোটুকু না হলেই নয় ঠিক ততটুকু শর্ত আরোপ করে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের জনসাধারণকে এই ঋণের আওতায় আনা হবে এটি আমরা প্রত্যাশা করি। কেবল বিকাশ এবং সিটি ব্যাংকই নয়, দেশের অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসবে এটিও আমরা প্রত্যাশা করি। এতে করে মহাজনী সুদের কারবার এর কবল থেকে দেশের সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। সেই সাথে রাষ্ট্রের রাজস্ব আয়ের পরিমানও বৃদ্ধি পাবে।
সবাইকে ধন্যবাদ।
ব্যাংকিং টাচে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের উন্মুক্ত এই অনলাইন পরিষেবাকে সৃজনশীলতার মঞ্চ হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে বদ্ধ পরিকর। আমরা আপনাদের নিকট হতে ব্যাংকিং ও আর্থিক বিষয়ক শৈল্পিক, শিক্ষামূলক, ডকুমেন্টারি, গবেষণামূলক বা বৈজ্ঞানিক আলোচনা সংক্রান্ত কন্টেন্ট বা যেসব কন্টেন্ট থেকে জনগণ উপকৃত হন এমন সব কন্টেন্ট প্রত্যাশা করি। আপনার মূল্যবান কন্টেন্ট আমাদের কাছে পাঠাতে ই-মেইল করুন [email protected] এই ঠিকানায়। | |||
আপনার একটু সমর্থনই আমাদের এগিয়ে চলা ও আরও ভাল কিছু করার অনুপ্রেরণা যোগায়। আপনার মূল্যবান সমর্থনটি জানাতে ভিজিট করুন আমাদের সমাজিক যোগযোগের পেজগুলোতে ও লাইক, ফলো ও সাবস্ক্রইব করে আমাদের সাথে থাকুন। ধন্যবাদ | |||
কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। বিস্তারিত....... |